রংপুর সদর সরকারি হাসপাতালে দালালের দৌড়াত্বে অতিষ্ট রোগীরা

 

মোঃ শরীফ মেহেদী হাসান।
তারাগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি।

রংপুর সরকারি ১০০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে দালালদের উৎপাত দিন দিন বেড়ে চলেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন হয়রানির শিকার সাধারণ রোগীরা।
শহীদুল ইসলাম নামে রোগীর এক স্বজন এই প্রতিবেদকের কাছে আক্ষেপ করে বলেন ভাই এটা কি মগের মুল্লুক যে এখানে রোগী ভর্তির জন্য সরকারী নিয়ম হলো ৩০ টাকা কিন্তু নিচ্ছে ২০০টাকা আবার ট্রলিতে করে রোগী ওয়াডে নেওয়ার জন্য ওয়ার্ড বয় দাবি করছে ২০০টাকা, রোগীকে বেড দেওয়া বাবদ নিচ্ছে ৩০০ টাকা। এব্যাপারে কথা বললে আবার তারা আমাদের সাথে বাজে আচরন করছে। এখানে রোগী ভর্তির জন্য এসে আমরা তো সবাই পাগল হয়ে যাচ্ছি এদের অমানবিক আচরনে, এটা কি দেখার কেউ নেই।

রোগী ও সাধারন মানুষের অভিযোগ, দালালরা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে রোগীদের সুকৌশলে পাশে থাকা বিভিন্ন ডায়গনিস্ট সেন্টার গুলোতে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, দালালদের জন্য সরকারি হাসপাতালের বিনামুল্যের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। এভাবে প্রতিনিয়ত হাসপাতালে দালালের চিত্র দেখা যাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঔষধ কোম্পানির রিপ্রেজেনটিটিভরা রোগীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে।

অনেকে অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালের পাশে থাকা যে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো রয়েছে সেখানে তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে কিছু নারী পুরুষ দালাল।

ডায়গনস্টিক সেন্টারের মালিকরা হাসপাতালে নিয়োগ দিয়ে রাখে ঐ সব দালালদের। তারাই বিভিন্ন ডাক্তারদের রুমের সামনে ডিউটি করেন। সেখান থেকে রোগীদের বুঝিয়ে ডায়গনস্টিক সেন্টারে নিয়ে গেলে প্রতি রোগীদের বিপরীতে মালিকরা শতকরা ৩০ থেকে ৫০ পার্সেন্ট টাকা দেন।

হাসপাতালের সামনে যেসব ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে তারাই দালালদের মদদদাতা বলে অভিযোগ রোগীদের।

হাসপাতালে রোগীদের নিয়ে টানা হেঁচড়া করে ডায়গনস্টিক সেন্টারগুলোতে নিয়ে যাচ্ছে এমন কিছু দালালদের তথ্য অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে।

রোগীরা অভিযোগ করে জানান, হাসপাতালের ডাক্তারকে বিনা পয়সায় দেখাতে আসার পর তিনি শরীরের নানান পরীক্ষা নিরিক্ষা করতে দিলেন। তখন একজন মহিলা এসে বললো, এগুলো সব পরীক্ষার জন্য পাশে ডায়গনস্টিক সেন্টার আছে। সদর হাসপাতালে এই সব পরীক্ষা হয় না। এরপর আমাকে নিয়ে গেলো পাশের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সেখানে আমার এক্সরে, রক্ত ও মূত্র পরীক্ষা করাই। অনেক টাকা বিল হয়েছে আমি এত টাকা বিল দিতে পারিনি। তাই আমাকে অনেক গালমন্দ করেছে। কিছু টাকা কোনমতে কম দিয়ে আসি।এই হয়রানির শেষ কোথায়?

এদিকে অনেকে বলেন, লোভী প্রকৃতির ডাক্তারেরাই দালালদেরকে পুষে রাখেন। মূলত ডাক্তার ও ডায়গনস্টিক সেন্টার মালিকরা মিলে এই দালালদেরকে হাসপাতালে রোগীর পেছনে লাগিয়ে রাখছে।

দালালের উপদ্রুপ লাঘবের বিষয়ে দ্রুত সমাধান পেতে রংপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কসহ সংশ্লিষ্টদের সুনজর প্রত্যাশা করেছেন ভুক্তভোগীগণ ও সচেতনমহল।