বাঙ্গরায় মাদ্রাসা থেকে ছুটি না পেয়ে ৫ তলা থেকে লাফ দিয়ে ছাত্রের আত্মাহত্যা।

হাফেজ নজরুল।

বাড়িতে যাওয়ার জন্য মাদ্রাসার পরিচালকের কাছে ছুটি চেয়েছিল মো. ফয়সাল (১২) নামে এক ছাত্র। কিন্তু বাড়িচ থেকে তাকে ছুটি দিতে নিষেধ করায় সে আর ছুটি পায়নি। এর আগে অন্য একটি মাদ্রাসার দুই তলা থেকে লাফ দিয়ে সে বাড়ি গিয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে সে এবার পাঁচ তলা ভবন থেকে লাফ দেয়। আর তাতেই চিরদিনের জন্য পৃথিবী থেকে ছুটি পায় সে।

রোববার সন্ধ্যায় ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার মুরাদনগরে উপজেলার বাঙ্গরা বাজারে মারকাযুস সুন্নাহ মাদ্রাসায়। নিহত ফয়সাল পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার মহালক্ষী পাড়ার মৃত. ফজল মাস্টারের ছেলে। সে ওই মাদ্রাসার হাফেজিয়া বিভাগের ছাত্র।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় চার মাস আগে বাঙ্গরা বাজারের অবস্থিত মৃত. তাজুল ইসলামের ছেলে রাসেল গাজীর পঞ্চম তলা বাড়ির দ্বিতীয় তলা ভাড়া নেন মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ আরিফ। সেখানে তিনি গড়ে তুলেন মাদ্রাসা। গত দশদিন আগে এ মাদ্রাসায় ভর্তি হয় ফয়সাল। বাড়ি যাওয়ার জন্য সে ছুটি চেয়েছিল মাদ্রাসার পরিচালকের কাছে। কিন্তু তারা ফয়সালের মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার মা জানান ঈদের সময় ছুটি দিতে।

পরে ফয়সাল বিকালে বন্ধুদের সঙ্গে ছাদে উঠে সন্ধ্যার দিকে ছাঁদ থেকে মাটিতে লাফ দেয়। পরে অন্য ছাত্ররা শিক্ষকদের বিষয়টি জানালে তারা নিচে এসে দেখতে পায় মাদ্রাসার পাশে ভাই-বোন অটো হাউজ নামে এক অটোরিকশার শো-রুমের টিনের চালা ভেঙে তার ভিতরে পড়েছে ফয়সাল।

এসময় ওই শো-রুমটি বন্ধ থাকায় মাদ্রাসার পরিচালক চাবির জন্য শো-রুমের মালিককে ফোন দেন। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় চাবি সংগ্রহ করে ফয়সালকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শো-রুমের মালিক ইউপি সদস্য মো. মামুন বলেন, হঠাৎ সন্ধ্যায় মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ আরিফ আমাকে ফোন করে বলেন তার মাদ্রাসার এক ছাত্র নাকি আমার শো-রুমে আটকা পড়ে আছে, দোকান খুলে দিলে তাকে উদ্ধার করবে। আমার দোকানের চাবি এ বাজারে একটি দোকানে আমি রেখে যাই, তাই উনাকে আমি বলেছি ওই দোকান থেকে চাবি এনে দোকান চেক করতে। পরে সকালে এসে ছাত্র নিহতের ঘটনা শুনে খুবই মর্মাহত হয়েছি।

মাদ্রাসার পরিচালক হাফেজ আরিফ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নিহত ছাত্র আমার চাচাতো শালার ছেলে। তার মা আমাকে জানিয়েছে এর আগে অন্য মাদ্রাসায় পড়ার সময় দুই তলা থেকে লাফ দিয়ে পালিয়ে সে বাড়ি চলে আসছিল।

বাঙ্গরা বাজার থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি, তবে এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।