কুষ্টিয়ায় বজ্রপাতের আঘাত থেকে বাঁচাতে ‘কৃষকের ছাউনি’, নির্মানের উদ্যোগ নেওয়া দরকার।

 

মোশারফ হোসেন কুমারখালী

কুষ্টিয়া জেলার দুর্গম অঞ্চলের খেত-খামারে কৃষি কাজ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়েন কৃষক। ঝড়-বৃষ্টিতে নিরাপদ আশ্রয় নিতে না পেরে হর-হামেশায় ঘটে দুর্ঘটনা। বজ্রপাতের আঘাত থেকে বাঁচতে কৃষকের ছাউনী নির্মাণের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন জেলার কৃষকরা।

প্রতি বছর বিশ্বের হাজার হাজার মানুষ বজ্রপাতে প্রাণ হারান। বিশেষ করে বর্ষাকালে খেতে-খামারে কৃষিকাজ করতে গিয়ে প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে মৃত্যু হয় অন্নদাতাদের। মাঠের ধারেকাছে কোন বাড়িঘরও থাকে না যে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটে যাবে সেখানে। তাই এ সময়টায় বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা অধিক দেখা গিয়েছে। বাংলাদেশে মার্চ থেকে জুন মাসে এভাবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে সর্বাধিক। খোলা মাঠে কাজ করতে গিয়ে বাংলাদেশে প্রতি বছর গড়ে ২০০র বেশি অন্নদাতার মৃত্যু ঘটে।

শুধু কৃষক না , অসাবধানতাবশত বজ্রপাতে প্রাণ হারান সাধারণ মানুষজনও।
এমন নিদারুণ করুণ পরিণতি বজ্রপাত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পেতে জেলা জুড়ে মাঠ গুলোতে কৃষকের ছাউনী নির্মাণের উদ্যোগ এখনি নেওয়া দরকার। কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুর ইসলাম জানান, কৃষকের ছাউনী নির্মাণের কোন প্রকল্প চালু নেই। তবে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা যেতে পারে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শ্যামল কুমার বিশ্বাস জানান, দুর্গম ও জনবসতি বিহীন এলাকায় কৃষকের ছাউনী বা আশ্রয়স্থল নির্মাণ করা হলে। কৃষকরা সহজে নিরাপদে আশ্রয় নিতে পারবেন। এই মুহূর্তে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের এমন কোন প্রকল্প চালু নেই। তবে ব্যক্তি উদ্যোগে কৃষকের ছাউনী নির্মাণ করলে তাদের কে সাধুবাদ জানাবো। কুষ্টিয়া জেলার সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য মতে জেলায় বজ্রপাতে গত বছর প্রায় ৩ জনের মৃত্যু ঘটনা ঘটেছে। তবে জেলা জুড়ে বজ্রপাতে নিহতের সংখ্যা অনেক বেশি।

গত এক বছরে সারাদেশে বজ্রপাতে প্রায় ২৩০ জন কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আর চলতি বছরের জানুয়ারি-মে পর্যন্ত বজ্রপাতে মারা গেছে আরো অর্ধশত কৃষক। আর এসব মৃত্যুর কারণ হিসেবে দুর্গম এলাকায় কাজ করা কৃষকদের তাৎক্ষণিক আশ্রয় না পাওয়াকে চিহ্নিত করেন।

এরপর ঝড়-বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে কৃষককে রক্ষার উপায় হচ্ছে কৃষকের জন্য নিরাপদ আশ্রয়। বাস ও ট্রেন যাত্রীদের বসার জন্য যাত্রী ছাউনি থাকলেও কৃষকের জন্য এমন একটি নিরাপদ ছাউনি নির্মাণের প্রয়োজন জেলা জুড়ে।

পর্যায়ক্রমে জেলা জুড়ে সর্বত্র এমন কৃষকের ছাউনি নির্মাণের জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগে কৃষকের ছাউনী নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহলের।