পর্যাপ্ত পানির অভাবে পাট জাগ দিতে না পেরে বিপাকে পাট চাষীরা।

আবীর খান মেহেরপুর : মেহেরপুরের,গাংনী উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে পর্যাপ্ত পানির অভাবে পাট জাগ দিতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন এই জেলার পাট চাষীরা।

বর্ষা মৌসুমে অনাবৃষ্টির কারণে এসব এলাকার খাল-বিল, পুকুর-জলাশয়ে পর্যাপ্ত পানি না থাকায় অতিরিক্ত শ্রমিক দিয়ে পাট বহন ও সেচের মাধ্যমে পাট জাগ দিচ্ছেন পাট চাষীরা। ফলে গুনতে হচ্ছে বাড়তি খরচ এতে করে পাট জাগ দিয়ে লোকসানের আশঙ্কা করছেন চাষিরা। গত বছরের তুলনায় এবার পাট চাষ বেশী হলেও পর্যাপ্ত পানির অভাবে পাট জাগ দেয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষীরা ।গাংনী উপজেলার অনেক গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে শ্যালাে ইঞ্জিন চালিত মেশিন ও মোটরের সাহায্য পানি দিয়ে পাট জাগ দিচ্ছেন চাষিরা । এতে করে বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে এ বিষয়ে গাংনী উপজেলার জুগিরগোফা গ্রামের কৃষক(সুজন আহমেদ)বলেন, এই বছর বর্ষাকালে ঠিকমত বৃষ্টির পানি না হওয়ায় মটারের পানি দিয়ে পাট জাগ দিতে হচ্ছে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, পানি না থাকায় রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট জাগ দেয়ার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। পাট জাগ দেয়া নিয়ে সমস্যা পাশাপাশি পাটের দাম নিয়েও চাষীরা শঙ্কায় রয়েছেন।এবার

গাংনী উপজেলার প্রশ্চিম মালসাদহ গ্রামের পাট চাষী রবিউল) জানান, পাট চাষ লাভজনক ভেবে এবছর পাট চাষে চাষীরা বেশী আগ্রহ দেখিয়েছে।মাঠে শুধু পাট আর পাট ,চারিদিকে শোভা পাচ্ছে।কিন্তু এখন পর্যাপ্ত পানির অভাবে সেগুলো জাগ দিতে না পারলে চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হবে।

এ বিষয়ে চাষিরা জানান, বিদ্যুৎ, ডিজেল ও সারের দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকায় অনেক কৃষকই বোরো ধান চাষ না করে তুলনামূলক সাশ্রয়ী পাট চাষের দিকে ঝুঁকেছিলেন এ বছর।

বিগত বছরে পাটের বাজার খারাপ থাকলেও এই বছর শুরুতেই পাটের বাজার দর সন্তোষজনক । পাট চাষে সর্বসাকুল্যে খরচ কম হলেও পাট কাটা, আঁশ পঁচানো (জাগ দেয়া) এবং রোদে শুকানো পর্যন্ত অনেক খরচ এবং পরিশ্রম। তা ছাড়া এই কাজে কাজ করা একজন দিনমজুরকে (৪০০)টাকা থেকে(৫০০)টাকা করে মজুরি দিতে হয় প্রতিদিন। এতাে খরচের পর এই বাজারমূল্য আরও বাড়ানোর জন্য আহবান জানান সাধারণ কৃষক রা।

এব্যাপারে গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার(মোছাঃলাভলী খাতুন) বলেন, এবছর পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়েছে।পাটের বর্ধন বা উচ্চতা আশানুরুপ হয়েছে।তবে বর্তমান সময়ে পাটের জমিতে পর্যাপ্ত রস না থাকার কারন এ পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। কারণ হিসাবে জানা গেছে, পাট চাষের শুরুতে প্রাকৃতিক বৃষ্টি থাকলেও । অনেকেই জমিতে সেচ দিয়ে পাট চাষ করেছেন। প্রথম দিকে আবহাওয়ার তাপমাত্রা কিছুটা বেশী থাকায় পাটের বর্ধন ভাল হয়নি। তবে কোন কোন মাঠে পাটের উচ্চতা খুব ভালো হয়েছে। এবার পাটের বাজার মূল্য অনেক ভালো।গত বছর গাংনী উপজেলায় পাট চাষ হয়েছিল নয় হাজার(৯)হাজার হেক্টর জমিতে। পাশাপাশি ধানের বাজার মূল্যও ভাল । সেকারণে অনেক চাষী পাট পরিপক্ক না হতেই কেটে জাগ দিচ্ছে। আমাদের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষনিক তদারকি করছেন এবং পাট জাগে পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষক দের। উদ্দেশ্য ঐ জমিতে আগাম ধান চাষ করবে। আমরা সব সময়ই আধুনিক প্রযুক্তিতে আবাদ করার জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করে আসছি। কৃষকরাও নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে লাভবান হচ্ছে বলে যানান তিনি………!