গরু চোর ধরে বিপাকে গ্রামবাসী

স্টাফ রিপোর্টার :
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের কমলেশ্বরদির মাহাতো পাড়ায় গরু চুরির দায়ে জসিম মোল্লা নামের এক যুবককে মারধরের ঘটনায় আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের নামে আদালতে দায়ের করা মামলা হয়রানী ও ষড়যন্ত্রমূলক দাবী করে প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে

কয়েকশত গ্রামবাসী। বুধবার বিকেলে কমলেশ্বরদি গ্রামের মাহাতপাড়া মন্দিরের সামনে মানববন্ধনে শহস্রাধিক নারী পুরুষ অংশ নেন। এসময় দাদপুর ইউনিয়নের দুই নং ওয়ার্ড সদস্য ও দাদপুর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি জাফর মোল্যা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবুল বাশার, ইউনিয়ন শ্রমিক লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মল্লিক, যুবলীগ নেতা শামীম হক, দুই নং ওয়ার্ড কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক বাচ্চু মোল্যা, সদস্য শহীদ মল্লিক, এক নং ওয়ার্ড কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ক্ষিতিশ মাহাতো সহ স্থানীয়রা বক্তব্য রাখেন। বক্তারা বলেন, গত ২৭ জুলাই রাতে

মাহাতোপাড়ার খগেন মাহাতোর গোহালঘরের তালা ভেঙ্গে দুটি গরু চুরি করে নিয়ে যাওয়ার সময় ভোররাত পৌনে চারটার দিকে একটি গরুসহ জসীম মোল্যা (২৫) নামে একজনকে আটক করে গ্রামবাসী। এরপর তাকে উপস্থিত জনতা বেঁধে রাখে এবং চোরদলের অন্যদের তথ্য ও চুরি হওয়া অন্য গরুর সন্ধান জানতে চেয়ে মারধর করে। তারা বলেন, খবর পেয়ে জয়নগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সুব্রত ঘটনাস্থলে এলে চুরি হওয়া গরুসহ জসীমকে পুলিশের হাতে তুলে দিলে আহত জসীমকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিকে এ ঘটনায় থানায় গরু চুরির মামলা দায়েরের প্রস্তুতিকালে আটক জসীম একজন ভাতাভোগী প্রতিবন্ধী দাবী করলে স্থানীয় গণ্যমান্যদের মধ্যস্থতায় তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন অভিযোগকারী খগেন মাহাতো। এদিকে, এ ঘটনাকে পুজি করে তিনদিন পর দাদপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ, কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ ও যুবলীগের সাতজন নেতার সাতজন নেতাকর্মীসহ ১১ জনের নামোল্লেখ করে জসীমের বড় ভাই নিজাম মোল্যা ফরিদপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৭ নং আমলী আদালতে একটি মামলা দাখিল করেন ৩১ জুলাই। মানববন্ধনে বলা হয়, এ মামলার উল্লেখিত আসামীদের কেউই ঘটনার সময় তারা উপস্থিত ছিলেন না। তারা অভিযোগ করেন, এ ঘটনাকে পুঁজি করে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। খগেন মাহাতো বলেন, ওই রাতে চুরি হওয়া গরুসহ জসীমকে পাটক্ষেত থেকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, অন্য গরুটি তার ভাই নিজাম নিয়ে গেছে। তা সত্ত্বেও সে ভাতাভোগী প্রতিবন্ধী হওয়ায় স্থানীয়দের অনুরোধে তারা হাতেনাতে চোরাই গরুসহ আটকের পরেও গরু চৃরির অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন। কিন্তু তাদের এই মানবিকতার প্রতি তাচ্ছিল্য করে এখন রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছেন। জসীমের পরিবারকে খুটি হিসেবে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী হাইব্রিড একটি গোষ্ঠী নোংরা রাজনীতি করছে। তারা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

মামলার প্রধান আসামী মো. জাফর মোল্লা জানান, খবর পেয়ে সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ব্যক্তিকে বেধে রাখা অবস্থায় দেখতে পাইি। এসময় পুলিশের সহযোগীতায় তাকে উদ্ধার করে আমি নিজেই হাসপাতালে ভর্তি করি। অজ্ঞাত কারণে আমাকেই প্রধান আসামী করা হয়েছে। এটি স্থানীয় রাজনীতির কোন্দলের খেলা মাত্র। মামলার ৫নং আসামী শামীম হক ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক। তিনি জানান ঘটনার রাতে আমি এলাকায়ই ছিলাম না। তিনদিন পর এলাকায় এসে জানতে পারি ঘটনাটি। ওই মামলায় আমাকে উদ্ধেশ্য প্রণোদিতভাবে আসামী করা হয়েছে। তিনি দাবী করেন, এগারো জন নামীয় আসামীদের সবাইকেই রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে আসামী করে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দাদপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন বলেন, আশেপাশের এলাকা থেকে সম্প্রতিকালে ১০-১িি২ট গরু চুরি হওয়ায় এলাকাবাসী আগে থেকেই ক্ষুব্দ ও সজাগ ছিলো। তিনি জানান, সকালে বিষয়টি জানতে পেরে পুলিশ, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও অন্যদের অবহিত করে দ্রুত বিষয়টি দেখার জন্যে বলি। এঘটনায় উল্টো মামলা করা ও স্থাণীয় আওয়ামী ঘরনার নেতা কর্মীদের আসামী করায় নিন্দা জানান তিনি। এব্যাপারে বোয়ালমারী থানার ওসি মুহাম্মদ আব্দুল ওহাবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জসীমকে আহত করার ব্যাপারে থানায় কোন অভিযোগ জানায়নি কেউ।